ক্রিড়া প্রতিবেদক,নারায়ণগঞ্জ প্রতিদিন ডট কম : সাসপেন্স, ক্লাইম্যাক্স, অ্যান্টি ক্লাইম্যাক্স এবং সবশেষে রহস্য-উন্মোচন। একসময় হলিউডে এই ছিল হিচককের ছবির সহজ ফর্মুলা। সোমবার বিপিএল তিনের দ্বিতীয় দিনের প্রথম ম্যাচে সব রসদই মজুদ ছিল। এই না হল টি ২০ ম্যাচ। শেষ ১২ বলে সিলেটের দরকার ২০ রান। অধিনায়ক মুশফিকুর ৩৪ রানে অপরাজিত। শেষ ছয় বলে ৯ রান। টি ২০তে কোনো ব্যাপার? মুশফিক ৪৪*। মিরপুরে উত্তেজনার পারদ তুঙ্গে। সেখান থেকে দুই বলে ৭। এক বলে ৩ রান। লড়াইটা মোহাম্মদ আমির বনাম মুশফিকুরের। চিটাগাং ভাইকিংসের পাকিস্তানি পেসার আমিরের অফ-স্টাম্পের বাইরের ফুলিশ লেন্থের বল মুশফিক কভারে ঠেলে এক রান নিলেন। আরেকটি শেষ বলের ফিনিশিংয়ে চিটাগাং ভাইকিংস জিতল এক রানে। তামিম ইকবালের প্রথম জয়ই মুশফিকের প্রথম হার। ৫০ পূর্ণ করা সিলেট অধিনায়ক অপরাজিত রইলেন। পরাজিত হল তার দল। ব্যাট-বলের এই রোমাঞ্চকর লড়াইয়ের আগে কাল অন্য নাটক মঞ্চস্থ হয়েছে মিরপুরে। ইংল্যান্ড বোর্ডের অনাপত্তিপত্র না থাকায় সিলেটের দুই ব্রিটিশ ক্রিকেটার খেলানো নিয়ে সৃষ্ট জটিলতায় নির্ধারিত সময়ের প্রায় ৭০ মিনিট পর শুরু হয় ম্যাচ। নিয়ম ভেঙে চারজনের জায়গায় দুজন বিদেশী নিয়েই সিলেটকে খেলার অনুমতি দেয় বিপিএলের টেকনিক্যাল কমিটি। বিপিএলের উদ্বোধনী দিন চার উইকেট নিয়েও চিটাগাংকে জেতাতে পারেননি আমির। কাল চার ওভারে ১৯ রান দিয়ে উইকটেশূন্য আমিরই জেতালেন তামিমদের। অদ্ভুত না টি ২০! সিলেটের শুরুটা হয়েছিল কিন্তু আশাজাগানিয়া। একাদশ মাঠে নামাতেই যাদের গলদঘর্ম হতে হয়েছিল, চার বিদেশীর বদলে দুজনকে নিয়েই যাদের প্রথম এগারো সাজাতে হয়, সপ্তম ওভারে ১/৬৬ ছিল তারা। স্বপ্নের বীজ বপন করেছিলেন শ্রীলংকান ওপেনার দিলশান মুনাবিরা। স্বদেশী দিলশানের (তিলকারত্নে) এক ওভারে ছয় চার মেরে সিলেট সুপার স্টার্সকে চনমনে করে তুলেছিলেন মুনাবিরা। অষ্টম ওভারে মাত্র ৩০ বলে ৬৪ (স্ট্রাইক রেট ২১৩.৩৩) করে তিনি যখন সাঈদ আজমলের ঘূর্ণির শিকার হন, সিলেট তখন ২/৭৬। এরপর হাল ধরেছিলেন সুপার স্টার্সের সুপারস্টার মুশফিকুর। গতবার দুরন্ত রাজশাহীর হয়ে খেলা বাংলাদেশ টেস্ট অধিনায়কের ৩৪ বলে হার না-মানা ৫০ শেষতক আক্ষেপের কারণ হয়ে রইল সিলেটের জন্য। আর মাত্র দুটি রান পেলেই তো সিলেট শুরুটা করতে পারত জয় দিয়ে। কিন্তু টি ২০-র চরিত্র এমনই যে, এখানে ঘন ঘন মোড় বদল হয়। গন্তব্যের কাছে পৌঁছে দেখা যায়, পথ শেষই হয়নি।
Leave a Reply